Pages

Friday, 8 May 2015

দিনে ১টি আপেল রোগ দূরে রাখে?

http://healthylife24.com/bangla/wp-content/uploads/2015/04/eating-apple.pngঅ্যান অ্যাপল্‌ আ ডে, কিপস্‌ দ্যা ডক্টরস্‌ অ্যাওয়ে’- প্রবাদটি শোনা নেই কার? অর্থাৎ প্রতিদিন একটি আপেল খেলে রোগ-বিরোগেও ভুগবেন না আপনি এবং চিকিৎসকের শরণাপন্নও হতে হবে না- এটাই বলে সর্বজনবিদিত প্রবাদটি।
কিন্তু আসলেই কি প্রতিদিন নিয়ম করে একটি আপেল খেলে রোগজীবাণু আর অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকা যায়? না, সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে এমনটাই।
গবেষণার ফল বলছে, যারা নিয়মিত আপেল খান- তাদেরকেও অন্য আর দশজন সাধারণ লোকের মতোই অসুখবিসুখ নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্ত হতে হয়। অর্থাৎ যারা নিয়মিত বা একেবারেই আপেল খান না, তারা যেমন অসুখ-বিসুখে ভোগেন, তাদের সাথে নিয়মিত আপেল খাওয়া ব্যক্তিদের তফাত নেই মোটেই।
মোটের ওপর পুরো বিষয়টি নির্ভর করে একজন ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অবস্থার ওপরেই।
গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন, জাত, শিক্ষাগত ভেদাভেদ ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এর ওপরই নির্ভরশীল রোগপ্রবণতার মাত্রা। এছাড়া স্বাস্থ্য বীমা সংক্রান্ত কাজেও অনেক সময় রোগ না হলেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন তো মাঝে মাঝে হতেই হয়!
২০০৭ থেকে ২০০৮ এবং ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্য জরিপে অংশ নেয়া আট হাজার চারশ’ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা।
গবেষণায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে তারা শেষ ২৪ ঘণ্টায় কী কী খেয়েছেন, শেষ এক বছরে তারা কোন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ইত্যাদি। গবেষণায় অংশ নেয়া মাত্র নয় শতাংশ ব্যক্তি প্রতিদিন একটি ছোট আপেল নিয়মিত খেয়েছেন। বাকিরা আপেল প্রায় খান না বললেই চলে।
দেখা গেছে, নিয়মিত আপেল খাওয়া ব্যক্তিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ পর্যায়ের এবং তারা তুলনামূলক কম ধূমপান করেন যারা আপেল খান না, তাদের চাইতে। আপেল খাওয়া ব্যক্তিরা সাধারণত চিকিৎসকদের পরামর্শমতো ঔষধ সেবন করেন না বলেও উঠে আসে গবেষণার ফলে।
তবে চিকিৎসকের পরামর্শকৃত ঔষধের বিকল্প হিসেবে তারা কোন ঔষধ বা পথ্য সেবন করেন, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক ও মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক গবেষক ম্যাথু ডেভিস জানান, ভিটামিন সি’র একটি ভালো উৎস হলো আপেল। একটি মাঝারি আকারের আপেলে প্রায় একশ’ গ্রাম ক্যালোরি এবং প্রতিদিন মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় আঁশের ২০ শতাংশ থাকে। এছাড়া স্বল্প পরিমাণে ভিটামিন এ, ক্যালশিয়াম ও খনিজ লোহাও থাকে এই ফলটিতে।
ধারণা করা হয়, ১৮০০ শতকে যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে আপেল নিয়ে প্রবাদটির সৃষ্টি হয়েছিল। আপেল সহজে পচে না এবং ওই সময়ে বছরজুড়ে সহজলভ্য- এমন হাতেগোনা কয়েকটি ফলের একটি ছিল আপেল।
খাদ্য তালিকায় আপেল রাখা ভালো, মনে করেন পুষ্টিবিদরা। তবে নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের পুরোটাই যদি স্বাস্থ্যকর না হয়, তাহলে কেবল একটি আপেল সেই অভাব কখনোই পূরণ করতে পারে না- জানান উত্তর ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. স্টিভেন জেইসেল।
তাই, গবেষণা কখনোই এটা বলে না যে আপেল খাওয়া উচিত নয় বা আপেল দেহের জন্য ভালো নয়। আপেল আর দশটি খাবারের মতোই সাধারণ একটি খাবার বা ফল যা খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে অনায়াসেই থাকতে পারে। খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার বা অন্যান্য ফলফলাদির সাথে আপেলের আলাদা করে তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

No comments:

Post a Comment